বিশ্বতথ্য

রহস্যময় পৃথিবীর অজানা ২২টি তথ্য

পৃথিবী আমাদের বাসস্থান, কিন্তু এখনও পৃথিবীর অনেক কিছুই আমাদের অজানা রয়ে গেছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন তথ্য আবিষ্কৃত হচ্ছে, যা আমাদের এই গ্রহ সম্পর্কে আরও ভালভাবে জানতে সাহায্য করে।

আজ আমরা আপনাদের জন্য এমন কিছু আশ্চর্যজনক তথ্য নিয়ে এসেছি যা হয়তো আপনার জানা ছিল না।

এক নজরে সূচীপত্র

রহস্যময় পৃথিবীর অজানা ২২টি তথ্য

পৃথিবী রহস্যে ভরা, এবং এর মধ্যে এমন অনেক তথ্য রয়েছে যা শুনে বিস্মিত হওয়া স্বাভাবিক। নিচে কিছু অজানা ও চমকপ্রদ তথ্য শেয়ার করছি:

১. পৃথিবীর কেন্দ্রে “সুপার-হট” তাপমাত্রা

পৃথিবীর কেন্দ্রের তাপমাত্রা প্রায় ৬,০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সূর্যের পৃষ্ঠের তাপমাত্রার কাছাকাছি। এত উচ্চ তাপমাত্রা সত্ত্বেও, সেখানকার চাপ এত বেশি যে সবকিছু কঠিন অবস্থায় থাকে।

আরও পড়ুনঃ  স্বার্থপর মানুষের বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি?

২. মরুভূমিতে তুষারপাত

মরুভূমি বলতে শুধু গরম বালির কথা মাথায় আসে, তবে সাহারা মরুভূমিতে কখনো কখনো তুষারপাত হয়। ২০১৮ সালে সাহারায় তুষারের একটি বড় স্তর জমেছিল।

৩. পৃথিবীর গ্র্যাভিটির পার্থক্য

পৃথিবীর সব জায়গায় গ্র্যাভিটি সমান নয়। কানাডার হাডসন উপসাগরের কিছু এলাকায় পৃথিবীর গড় গ্র্যাভিটির তুলনায় কম। এটি অঞ্চলটির ভূপৃষ্ঠের ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের কারণে।

৪. গভীর সমুদ্রের রহস্য

পৃথিবীর মহাসাগরগুলোর ৮০% এখনও অন্বেষণ করা হয়নি। গভীর সমুদ্রে এমন জীব-জন্তু আছে, যেগুলো কখনো মানুষের চোখে পড়েনি।

৫. চাঁদের চেয়ে প্রশান্ত মহাসাগর বড়

পৃথিবীর বৃহত্তম মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর, চাঁদের মোট আয়তনের চেয়ে বড়। এর ক্ষেত্রফল প্রায় ১৬ কোটি বর্গকিলোমিটার।

৬. বজ্রপাতের বিস্ময়কর সংখ্যা

প্রতি সেকেন্ডে পৃথিবীতে প্রায় ১০০ বার বজ্রপাত হয়। বছরে এই সংখ্যা প্রায় ৩.৫ বিলিয়নের কাছাকাছি পৌঁছে।

৭. পৃথিবীর গতি কমে যাচ্ছে

প্রতি বছর পৃথিবীর ঘূর্ণনের গতি প্রায় ১.৭ মিলিসেকেন্ড ধীরে হচ্ছে। এটি চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ প্রভাবের কারণে ঘটে।

৮. আকাশ থেকে মাছ পড়া

বিভিন্ন সময়ে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হিসেবে আকাশ থেকে মাছ পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এটি টর্নেডোর মতো আবহাওয়ার কারণে ঘটে, যা জলাশয় থেকে মাছ টেনে আনে।

৯. একটি দিন ২৪ ঘণ্টা নয়

পৃথিবীর একদিন আসলে ঠিক ২৪ ঘণ্টা নয়। একদিন প্রায় ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড লম্বা। তবে সূর্যের অবস্থান এবং পৃথিবীর কক্ষপথের কারণে আমরা এটিকে ২৪ ঘণ্টা হিসাবে গণনা করি।

আরও পড়ুনঃ  আয়নাঘর কি? কোথায়? দেখতে কেমন?

১০. পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক স্থান

আপনার ধারণা থাকতে পারে সাহারা সবচেয়ে শুষ্ক স্থান, কিন্তু চিলির আটাকামা মরুভূমি পৃথিবীর সবচেয়ে শুষ্ক স্থান। এখানে কিছু এলাকায় বছরের পর বছর ধরে একফোঁটা বৃষ্টি পর্যন্ত হয় না।

১১. সমুদ্রের নীচে লুকানো নদী

মেক্সিকোতে সেনোট অ্যাঞ্জেলিটা নামক একটি স্থান আছে, যেখানে সমুদ্রের নিচে আসলে একটি নদী বয়ে চলেছে। এটি হাইড্রোজেন সালফাইডের কারণে তৈরি একটি আলাদা স্তর।

১২. গাছের কথোপকথন

গাছেরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। উড ওয়াইড ওয়েব (Wood Wide Web) নামক ফাঙ্গাসের মাধ্যমে তারা পুষ্টি, বিপদ সংকেত এবং অন্যান্য বার্তা আদানপ্রদান করে।

১৩. মৃতদের “বায়ুমণ্ডলীয় ভ্রমণ”

পৃথিবীতে আপনি যে বাতাসে শ্বাস নিচ্ছেন, তা একসময় প্রাচীন জীবজন্তু বা মানুষের শ্বাস থেকে বের হওয়া গ্যাস হতে পারে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড প্রায় চক্রাকারে ঘুরতে থাকে।

১৪. চলমান পাথর

আমেরিকার ডেথ ভ্যালিতে কিছু পাথর রয়েছে, যেগুলো নিজেরাই চলতে পারে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, বরফ এবং বাতাসের সমন্বয়ে পাথরগুলো নড়াচড়া করে।

১৫. অদৃশ্য পানির অস্তিত্ব

পৃথিবীর ভূগর্ভস্থ শিলার ফাঁকফোকরে প্রচুর পানি জমা রয়েছে, যা ভূগর্ভস্থ জলাধারের থেকেও বেশি। এটি পৃথিবীর শিলাস্তরে লুকিয়ে থাকে।

১৬. বায়ুমণ্ডলের আশ্চর্য

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল মহাকাশে ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে। প্রতি বছর প্রায় ৯০ টন বায়ু মহাকাশে উড়ে যায়। তবে এটি পৃথিবীর জীবজগতে তেমন প্রভাব ফেলে না।

১৭. সবচেয়ে গভীর গর্ত

রাশিয়ার কোলা সুপারডীপ বোরহোল পৃথিবীর সবচেয়ে গভীর গর্ত, যা প্রায় ১২ কিলোমিটার গভীর। এটি তৈরি করতে ২০ বছরেরও বেশি সময় লেগেছিল।

১৮. বিপদজনক “রঙিন হ্রদ”

ইন্দোনেশিয়ার কেলিমুতু আগ্নেয়গিরির হ্রদগুলো বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে। তবে এই রঙের পরিবর্তনের কারণ এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি। বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন, আগ্নেয়গিরির গ্যাস এবং খনিজ পদার্থের মিশ্রণে এটি ঘটে।

আরও পড়ুনঃ  ১৯৫২ ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ কে?

১৯. চাঁদহীন রাতের পৃথিবী

যদি পৃথিবীতে চাঁদ না থাকত, তাহলে রাত অনেক বেশি অন্ধকার হত। চাঁদ সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে পৃথিবীকে আলোকিত করে।

২০. পৃথিবীর ওজন বৃদ্ধি

পৃথিবী প্রতি বছর প্রায় ৪০ হাজার টন মহাজাগতিক ধূলিকণা গ্রহণ করে, যা এর মোট ওজন বাড়ায়।

২১. সবচেয়ে বেশি উষ্ণ স্থলভাগ

ইরানের লুট মরুভূমি পৃথিবীর সবচেয়ে গরম স্থান, যেখানে তাপমাত্রা প্রায় ৭০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছায়।

২২. রহস্যময় মাইগ্রেটিং পাখি

কিছু পাখি হাজার হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে একই স্থানে ফিরে আসে, যেখানে তারা জন্মেছিল। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, তারা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রকে নেভিগেশনের জন্য ব্যবহার করে।

শেষ কথাঃ এই তালিকাটি কেবল একটি ছোট্ট উদাহরণ। পৃথিবীর এমন অনেক রহস্য রয়েছে যা এখনও আমাদের কাছে অজানা। বিজ্ঞানীরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন আবিষ্কার করে চলেছেন এবং এই আবিষ্কারগুলো আমাদের পৃথিবী সম্পর্কে আরও ভালভাবে জানতে সাহায্য করে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এটিও দেখুন
Close
Back to top button

অ্যাডব্লকার ডিটেক্ট হয়েছে!

মনে হচ্ছে আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমাদের সাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অ্যাড ব্লকার বন্ধ করতে হবে। যদি অ্যাডব্লকার ব্যবহার না করেন, তাহলে পেজটি রিফ্রেশ করুন।