বিশ্বতথ্য

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী ধর্মঘট: ৭ এপ্রিল থমকে যাবে বহু শহর

এই মুহূর্তে গাজার পাশে দাঁড়ানো শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং মুসলমানদের জন্য এটি একটি ঈমানী দায়িত্ব।

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবার সরব হচ্ছে পুরো বিশ্ব। এই বর্বরতার বিরুদ্ধে ৭ এপ্রিল, সোমবার বিশ্বব্যাপী একযোগে বিক্ষোভ ও ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। বিশ্বের শতাধিক দেশে কর্মস্থল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাস্তায় নেমে মানুষ জানাবে—“গাজা বাঁচাও, যুদ্ধ বন্ধ করো।

কেন এই ধর্মঘট?

গত কয়েক মাসে গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৩০,০০০ ফিলিস্তিনি, যাদের একটি বড় অংশই নারী ও শিশু। ধ্বংস হয়েছে হাসপাতাল, মসজিদ, স্কুল, আবাসিক এলাকা—সবকিছু।

জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংগঠনসহ বহু প্রতিষ্ঠান এই হামলাকে যুদ্ধাপরাধ বলে নিন্দা জানালেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি। তাই এবার বিশ্ববাসী নিজেরাই গর্জে উঠছে।

ঈমানদারদের ঈমানী দায়িত্ব

এই মুহূর্তে গাজার পাশে দাঁড়ানো শুধু মানবিক দায়িত্ব নয়, বরং মুসলমানদের জন্য এটি একটি ঈমানী দায়িত্ব। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন—
“মুমিনরা পরস্পরের প্রতি দয়া, সহানুভূতি ও ভালোবাসায় একটি দেহের মতো। দেহের একটি অঙ্গ ব্যথিত হলে, পুরো দেহ তা অনুভব করে, নিদ্রাহীন হয়ে পড়ে, জ্বরে আক্রান্ত হয়।” (সহিহ বুখারি ও মুসলিম)

গাজার প্রতিটি কান্না, প্রতিটি রক্তধারা যেন আমাদের হৃদয়েও ব্যথার সাড়া জাগায়।

কোন কোন দেশে ধর্মঘট পালিত হবে?

এই ধর্মঘট পালিত হবে—
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ার বহু দেশে।

বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রমিক সংগঠন, ছাত্র ও মানবাধিকার কর্মীরা এতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করবেন।

বাংলাদেশের প্রস্তুতি

বাংলাদেশেও ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে মানববন্ধন, মিছিল, ও শিক্ষার্থী ধর্মঘটের প্রস্তুতি চলছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসাগুলোর শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদে যুক্ত হচ্ছেন।

আরও পড়ুনঃ  হামাস কি? হামাস কোন দেশের সংগঠন?

ধর্মঘটের মূল লক্ষ্য

  • গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি
  • মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি
  • ইসরায়েলের যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবি
  • ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক জনমত গঠন

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিবাদের ঢেউ

#CeasefireNow, #FreePalestine, #StrikeForGaza, #GazaGenocide—এই হ্যাশট্যাগগুলোতে লক্ষ লক্ষ মানুষ নিজেদের মত প্রকাশ করছেন। বিশ্বজুড়ে গড়ে উঠছে প্রতিরোধের নতুন প্ল্যাটফর্ম।

শেষ কথা:

৭ এপ্রিল বিশ্বকে দেখিয়ে দিতে হবে—আমরা চুপ করে বসে নেই। আমরা মানবতা ও ঈমানের পক্ষেই দাঁড়াচ্ছি। গাজার শিশুরা আজ আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে, তাদের কান্না আমাদের হৃদয়ে বাজছে।

এই প্রতিবাদ শুধু একটি ধর্মঘট নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক বার্তা: ‘অবিচারের বিরুদ্ধে নীরব থাকা মানেই অপরাধে অংশীদার হওয়া।’

তথ্যসূত্র: আল-জাজিরা, বিবিসি, গার্ডিয়ান, আল-মায়াদিন, বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিবেদন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

এটিও দেখুন
Close
Back to top button

অ্যাডব্লকার ডিটেক্ট হয়েছে!

মনে হচ্ছে আপনি অ্যাড ব্লকার ব্যবহার করছেন। আমাদের সাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অ্যাড ব্লকার বন্ধ করতে হবে। যদি অ্যাডব্লকার ব্যবহার না করেন, তাহলে পেজটি রিফ্রেশ করুন।